
জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনে ৫৫ বিনিয়োগকারী
- আপলোড সময় : ০৯-০৪-২০২৫ ০৫:১২:২৫ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৯-০৪-২০২৫ ০৫:১২:২৫ অপরাহ্ন


চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। ৫৫ বিদেশি বিনিয়োগকারী গত সোমবার বিকাল ৩টার দিকে জাতীয় বিশেষ এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে পৌঁছেন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজনে ঢাকায় শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনে আসা যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ৪০টি দেশের অর্ধশতাধিক বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রথম দিনের কর্মসূচির অংশ হিসাবে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনে আসেন। এ সময় বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল কার্যালয়ে এর সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করে। এরপর কার্যালয়ের সামনে ফটোসেশন করেন বিনিয়োগকারীরা। তারা জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল গাড়িবহর নিয়ে ঘুরে দেখেন। এ সময় বঙ্গোপসাগর উপকূলে কীভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হয় সেই বিষয়েও আলোকপাত করা হয়। বিকাল ৫টার দিকে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রশাসনিক ভবনে এর নানা সুবিধা, ইতিমধ্যে কারা বিনিয়োগ করেছেন, কেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবেন, বিগত বছরগুলোর সফলতার চিত্রসহ বিনিয়োগকারীদের সামনে নানা দিক তুলে ধরেন এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক। এ সময় তিনি জানান, ইতিমধ্যে জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো বার্জার, এশিয়ান পেইন্টস, নিপ্পন অ্যান্ড ম্যাকডোনাল্ড স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, জাইহং মেডিকেল, আদানি, হেলথকেয়ার, উইলমার, ম্যারিকো, এসিআই, বিএসআরএম, বিজিএমইএ, বসুন্ধরা গ্রুপ, টিকে গ্রুপ, ইফাদ অটোস লিমিটেড। তিনি আরও জানান, জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের (প্রাইড) আওতায় ১ জানুয়ারি ২০২১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চার হাজার ৩৪৭ কোটি টাকা বরাদ্দে বেসরকারি বিনিয়োগ প্রাধান্য, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও টেকসই পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রাইড প্রোজেক্টের আওতায় মেজর ইনটারভেনশনস হলো ৩০ কিলোমিটার সড়ক, ৩১ কিলোমিটার ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক, পাওয়ার নেটওয়ার্ক, টেলিকম নেটওয়ার্ক, গ্যাস নেটওয়ার্ক, স্কিল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, চাইল্ড কেয়ার সেন্টার, ইনভেস্টর ক্লাব, এনভায়রনমেন্টাল ল্যাব, এনার্জি রেসপন্স সেন্টার, সিকিউরিটি এমিনিটিস, কনস্ট্রাকশন অব সিইটিপি, রুপটপ অ্যান্ড প্লোটিং সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট, সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্লান্ট, ডিসেলাইনেশান প্লান্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিমবাইওসিস, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ২২০০০ ওয়ার্কার্স-ইনক্লুডিং ২০০০ ইন্টারভেনশন এরিয়া পিপল, ভাউচার প্রোগ্রাম, গ্র্যান্ট ফর গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিজ। সব শেষে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, প্রায় ৬০ জনের মতো বিনিয়োগকারী চায়না, সাউথ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আজ এসেছেন। তারা প্রথমে চট্টগ্রামের আনোয়ারা কোরিয়ান ইকোনোমিক জোন তারপর জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন। এখানে বিনিয়োগকারীদেরকে ধারণা দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে কী কী সুযোগ সুবিধা আছে, এখানে পর্যাপ্ত ল্যান্ড আছে, সেসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের সামনে তুলে ধরেছেন। বিনিয়োগের জন্য যেসব চ্যালেঞ্জগুলো আছে সেই চ্যালেঞ্জগুলো অ্যাড্রেস করা হচ্ছে। এখানে পানির সমস্যা আছে সেটা অ্যাড্রেস করা হচ্ছে, শ্রমিক সমস্যা ছিল সেটাও কমে এসেছে, আধুনিক হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে; পাঁচতারা মানের ইনভেস্টর ক্লাব তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য ফ্যাসিলিটিস বিনিয়োগকারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’ প্রসঙ্গত, জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ৩৩ হাজার ৮০৫ একর ভূমিতে বিস্তৃত। অঞ্চলটি বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। এখানে বিশেষ করে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির জন্য নির্ধারিত ৫০০ একরের একটি অঞ্চল। এ ছাড়াও এই অঞ্চলে কৃষিপণ্য এবং কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্রপাতি, সমন্বিত বস্ত্র, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, জাহাজ নির্মাণ, মোটরবাইক আনুষঙ্গিক, খাদ্য ও পানীয়, রঙ ও রাসায়নিক, কাগজ এবং সম্পর্কিত পণ্য, প্লাস্টিক, হালকা প্রকৌশল ও ওষুধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ